নিম পাতা ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ম্যালেরিয়া রোগ দূর করতে নিম পাতা অত্যন্ত উপকারী। এছাড়া
শরীরের ব্যথা, ক্ষতস্থান, পুড়ে যাওয়া, কান
ব্যথা, মচকানো, মাথাব্যথা ও জ্বর কমাতে ব্যবহার করলে অনেক উপকার
পাওয়া যায়।
পেজ সূচিপত্রঃ নিম পাতার বড়ি খেলে কি হয় - চুলের যত্নে নিম পাতার
ব্যবহার
নিম পাতার বড়ি খেলে কি হয়
নিম পাতার বড়ি খেলে কি হয়? চিকিৎসা ক্ষেত্রে বলা হয়েছে নিম পাতার
অসাধারণ গুণাবলী রয়েছে। সাধারণত নিম গাছের পাতা কে নিম পাতা বলা
হয়। নিম গাছ একটি বর্ষজীবী ও চির হরিত বৃক্ষ। নিম পাতার সাথে
কাঁচা হলুদ মিশ্রণ করে নিম পাতার বড়ি বানিয়ে সেবন করলে বিভিন্ন রোগের
উপকার পাওয়া যায়। এটি একটি ভেষজ সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
পালন করে থাকে।
নিম পাতা কত ধরনের হয়
নিম পাতা কত ধরনের হয় এটি জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিম পাতা একটি
ঔষধি গাছ। নিম পাতার গাছ সাধারণত আকৃতিতে ৪০ থেকে ৫ ফুট পর্যন্ত লম্বা
হয়ে থাকে। নিম গাছের কান্ড ২০ থেকে ৩০ ইঞ্চি ব্যাস হতে
পারে। নিম গাছের ডালের চারদিকে ১০ থেকে ১২ ইঞ্চি যৌগিক পত্র জন্মে
থাকে। নিম পাতায় খাস কাটা পত্তক ১০ থেকে ১৭ টি। ডিম গাছের পাতা
২.৫ থেকে ৪ ইঞ্চি লম্বা হয়। জুন থেকে জুলাই মাসে নিম পাতার
ফল পাকে। নিম পাতার ফল তেতো স্বাদের হয়ে থাকে। বাংলাদেশের প্রায় সব
জায়গায় এই গাছটি জন্মে তবে, বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে বেশি পাওয়া
যায়।
নিম পাতার গুড়া খেলে কি হয়
নিম পাতার গুড়া খেলে কি হয়? মানবদেহে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া
প্রতিরোধে নিম পাতার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য,
যা শরীর থেকে ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি শরীর
থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন বের করতে সাহায্য করে। নিম পাতার গুড়া
পাচনতন্ত্রের স্বাস্থ্যেরও সাহায্য করতে সক্ষম, যেমন অম্বল বা গ্যাসের
সমস্যা কমাতে পারে।
নিম পাতার গুড়া খেলে কি হয় জেনে নিন:
-
ডায়াবেটিস রোগীরা নিমপাতা গুড়া খেতে পারেন।
-
রক্ত পরিষ্কার এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করতে এটি সেবন করতে
পারেন।
-
জন্ডিস ও ভাইরাস রোগ থাকলে এটি ব্যবহার করতে পারবেন।
-
ত্বকের বিভিন্ন ক্ষতিকারক পদার্থ, ব্রণ, ও ক্ষত দূর করতে পারে।
-
চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে এবং খুশকি ও উকুন দূর করতে এটি সেবন করতে
পারবেন।
নিম পাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
নিম পাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় জেনে নিন। নিম পাতা এন্টি
ব্যাকটেরিয়াল, এন্টিফাঙ্গাল ও এন্টিভাইরাল উপাদান সমৃদ্ধ। এটি ত্বকের
ইনফেকশন সরাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। গরম পানিতে কয়েকটি নিম
পাতা নরম হওয়া পর্যন্ত সেদ্ধ করতে হবে। ভালোভাবে পানি থেকে গোসলের পানি
সঙ্গে মিলিয়ে প্রতিদিন এই পানিতে গোসল করলে, ত্বকের বিভিন্ন ধরনের
ক্ষতিকারক ইনফেকশন ভালো হয়ে যাবে। এর ফলে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি
পাবে। এটি ফর্সা হওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
এছাড়াও ত্বকের বিভিন্ন ব্রণ দূর করতে নিম পাতা ব্যবহার করতে পারবেন।
ত্বকের সেবাকাস গ্রন্থিতে অতিরিক্ত ময়লা এবং ব্যাকটেরিয়া জমে থাকার কারণে
তোকে ব্রণ হয়। যাতে আমাদের অস্বস্তিকর বোধ হয়। এ রোগের একটি সমাধান
হলো নিম পাতা। নিম্নচা সেদ্ধ করে সে পানিতে একটি তুলার বল ডুবিয়ে তুলোর বল
দিয়ে আস্তে আস্তে মুখে মাসাজ করলে ত্বকের ব্রণ থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
এছাড়াও মুখের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব কমাতে চাইলে শসা ও নিমের ফেসপ্যাক তৈরি
করে ব্যবহার করতে পারেন।
চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার
চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার অত্যন্ত উপকারী। নিম পাতা বিভিন্ন ভেষজ
গুণ সমৃদ্ধ একটি উদ্ভিদ। এটি চুলের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে। নিমপাতা
চুল পড়া কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতি সপ্তাহে একবার
নিমপাতার পেস্ট তৈরি করে এক ঘন্টা চুলে লাগিয়ে রাখার ফলে মাথার চুল
ধীরে ধীরে শক্ত হয়, এর ফলে চুল পড়া রোধ হয়। এটি চুলের গোরা শক্ত করে এবং
চুলকে মজবুত করতে সাহায্য করে।
সপ্তাহে দুই দিন নিম পাতার রস, আমলকির রস এবং লেবুর রস দিয়ে পরিমাণ মতো টক
দইয়ের সাথে মিশিয়ে চুলে লাগালে খুশক ও উকুন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এটি
সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট চুলের লাগিয়ে রাখতে পারবেন, বেশিক্ষণ লাগিয়ে রাখা উচিত
নয়। এছাড়াও নিম পাতার সাথে মধু মিশিয়ে সপ্তাহে তিন দিন ব্যবহার করলে চুল
তোল তোলে নরম এবং ঝলমলে হয়। এটি সর্বোচ্চ ২0 মিনিট ভালোভাবে লাগিয়ে রাখতে
হবে এরপর শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।
চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার
চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার এর নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন। চর্মরোগ একটি
খারাপ রোগ। এ রোগের লক্ষণ সাধারণত বর্ষাকালে বেশি লক্ষ্য করা যায়।
আদ্রতার কারণে চর্মরোগ খুব সহজেই আক্রমণ করতে পারে। এ ধরনের রোগের জন্য নিম
পাতা ব্যবহার করা যেতে পারে।
চর্মরোগ সংক্রমণের সর্বোত্তম চিকিৎসা হলো নিম পাতার পেস্ট ব্যবহার
করা। নিম পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ঔষধি গুণ। এই গাছের শিকড় থেকে শুরু
করে পাতা, ফুল, বীজ, শিকড়, বাকোল, কাঠ সবকিছুতেই রয়েছে বিভিন্ন
রোগের চিকিৎসা।
০-১০ গ্রাম নিম গাছের ছাল এবং নিম গাছের বীজ, ডিম্বা তার সঙ্গে মিক্স
করে একটি পেস্ট তৈরি করা যায়। এটি ত্বকের যেকোনো সংক্রান্ত চুলকানি বা দাদ
ইত্যাদিতে ভালোভাবে লাগালে ভালো হয়ে যায়। ত্বকের ব্রণের উপরও এই টেস্টটি
ব্যবহার করতে পারবেন।
নিম পাতার উপকারিতা
নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে সকলেরই জানা অত্যন্ত জরুরী। নিম পাতা
বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা যায়। নিম পাতা বিভিন্ন রোগের সমাধানও দিয়ে
থাকে। নিম পাতা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে যা ডায়াবেটিস
রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। নিম পাতার বড়ি খেলে কি হয়? নিমপাতা
বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে এছাড়া বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে
ব্যবহার করতে পারেন।
নিম পাতাতে এন্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে যা শরীরের কোষগুলোকে মুক্ত
রেডিক্যালস থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে, এবং বয়সজনিত সমস্যা সমাধানে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিম পাতার রক্ত পরিশোধন করতে সাহায্য
করে এবং শরীরের বিষাক্ত পদার্থকে দূর করতে সহায়ক। নিমপাতা শরীরের রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে। এছাড়া শারীরিক ফাংশন গুলোকে
সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারে।
লেখকের কথাঃ নিম পাতার বড়ি খেলে কি হয় - চুলের যত্নে নিম পাতার
ব্যবহার
নিম পাতার বড়ি খেলে কি হয় ও চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে
জানানোর চেষ্টা করেছি। নিম পাতা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত
উপকারী একটি উপাদান। নিম পাতা আমরা বিভিন্নভাবে ব্যবহার করতে পারি। নিম
পাতায় বিভিন্ন গুণাগুণ থাকায় এতে আমাদের বিভিন্ন কাজে লাগে। বিভিন্ন
উপাদান বিদ্যমান রয়েছে। তবে এটি সাবধানতা পূর্বক ব্যবহার করা উত্তম।
লেখকের মতে, প্রিয় পাঠক আমরা আপনাকে নিমপাতার বিভিন্ন গুনাগুন ও এটি
ব্যবহারের সঠিক নিয়ম সম্পর্কে যথারীতি সম্পন্ন জানানোর চেষ্টা করেছি।
আমাদের পোস্টটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হোন তাহলে আর নতুন নতুন আপডেট
পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। নতুন কোন অজানা বিষয় জানতে এখনই আমাদের
ওয়েবসাইটে সার্চ করুন। আমাদের পোস্টটি পড়ে ভালো লাগলে সুন্দর একটি কমেন্ট
করে জানাবেন ধন্যবাদ।
আওয়ার ড্রিম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url