রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ - রোজা রাখার নিয়ত বাংলায়

রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। রমজান মাসে রোজা রাখা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ন বিধান। এই মাসে আল্লাহর ইবাদতের মাধ্যমে আমাদের সকলের গুনাহ প্রায়শ্চিত্ত করার একটি সুবর্ণ সুযোগ থাকে। তাই আমাদেরকে সম্পূর্ণ নিয়ম অনুসারে রোজা রাখতে হবে। 

রোজা-ভঙ্গের-কারণ-সমূহ

রোজা রাখার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। এছাড়া কি কি কারণে রোজা ভেঙে যায় এ বিষয়ে জানা অত্যন্ত জরুরী। তাই যারা রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ - রোজা রাখার নিয়ত বাংলায় জানতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পেজ সূচিপত্রঃ রোজা ভঙ্গের কারণসমূহ - রোজা রাখার নিয়ত বাংলায়

রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ

রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ আমাদের অবশ্যই যারা অত্যন্ত জরুরী। বিভিন্ন কারণে রোজা ভেঙে যেতে পারে যেমন খাওয়া, পান করা এবং স্ত্রী-সম্পর্ক।

রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ নিচে দেওয়া হলোঃ

  • বিরি-সিগারেট বা হুক্কা সেবন করা।
  • ভুলে কিছু খেয়ে ফেললে রোজা ভেঙ্গে গেছে ভেবে কিছু খাওয়া।
  • নিজের থুতু নিজে হাতে নিয়ে গিলে ফেলা।
  • রাত মনে করে শুবহে সাদিকের পর সেহরি খাওয়া।
  • কাউকে জোর জবরদস্তি করে পানাহার করানো।
  • ইচ্ছা করে বমি করা।
  • ইসলাম ত্যাগ করা।
  • মুখভরে বমি করা।
  • গ্লুকোজ বা শক্তিবর্ধক ইনজেকশন বা স্যালাইন দিলে।
  • কান বা নাক দিয়ে ওষুধ প্রবেশ করালে।
  • বমির বেশিরভাগ মুখে আসার পর তা গিলে ফেলা।
  • মেয়েদের মাসিক ও সন্তান প্রসবের পর ঋতুস্রাব হলে।
  • রোজা স্মরণ থাকা অবস্থায় কুলি করলে বা নাকে পানি দেওয়ার সময় ভেতরে পানি চলে গেলে।

আইয়ামে বিজের রোজা কত তারিখ

প্রতিমাসে ১৩ ১৪ ১৫ তারিখ রোজা রাখার ফজিলত হাদিস শরীফে বর্ণিত রয়েছে। ইসলামের ভাষায় এই দিন গুলোকে আইয়ামে বিজ বলা হয়। বিজ শব্দের অর্থ হলো সাদা বা পরিষ্কার। প্রতিমাসে ১৩ ১৪ ১৫ তারিখ রাত চাঁদের আলোয় ঝলমল করে। তাই এই দিনগুলোতে রোজা রাখা যেতে পারে।


পবিত্র কুরআন মাজিদের সুনানে তিরমিজি হাদিস শরীফে ৭৬১ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, আবুজর (রাঃ)) -কে নবীজি (সাঃ) বলেছেন তুমি যদি প্রতি মাসে তিনটি দিন রোজা রাখতে চাও তাহলে ১৩, ১৪, ১৫ এই তিনটি দিনে রোজা রাখতে পারো।

আইয়ামে বিজের রোজা কত তারিখ এটি সবারই জানা উচিত। প্রতিমাসে ১৩ ১৪ ১৫ তারিখ রোজা রাখার ফজিলত রয়েছে। এর মধ্যে ১৩, ১৪, ১৫ এই তিনটি দিনগুলোকে আইয়ামে বিজ বলা হয়। আইয়ামে বিজের রোজা ১৩, ১৪ এবং ১৫ তারিখ। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর রোজা গুলো কখনোই ছাড়তেন না। কারণ এ রোজার অনেক ফজিলত রয়েছে। এই তিনটি রোজা রাখাকে মুস্তাহাব বলা হয়।

কোরআন ও হাদিসের রোজার ইতিহাস

কোরআন ও হাদিসের রোজার ইতিহাসে বলা হয়েছে দ্বিতীয় হিজরীর শাবান মাসে রোজা ফরজ করা হয়েছে। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সাহাবায়ে কেরাম আশুরা ও আইয়ামে বীজের রোজা রাখতেন। রোজা রাখার ব্যাপারে বান্দার ইচ্ছাধিকার ছিল। তখন কেউ স্বেচ্ছায় রোজা না রেখেও ফিদিয়া দিতে পারতেন। এরপর রোজার অভ্যাস হয়ে যাওয়ার পর শীতলতা তুলে নেওয়া হয় যার ফলে রোজা রাখা ফরজ করা হয়।

পৃথিবীর শুরুর দিক থেকেই রোজার বিধান ছিল। প্রত্যেক যুগে আলাদা আলাদা নিয়মের রোজা রাখতেন সবাই। তবে রোজা রাখার উদ্দেশ্য ছিল আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়া। মহান আল্লাহতালা পবিত্র কোরআন মাজীদে বলেন, হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে। যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্বের লোকদের ওপর। যাতে তোমরা মুক্তাদী হতে পারো। এটি '-সূরা বাকারা ১৮৩' নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে।

তারাবি নামাজের নিয়ত আরবিতে

আরবিতে তারাবি নামাজের নিয়ত হলোঃ

নাওয়াইতু আন উসালিল্লা লিল্লাহি তা'আলা রকাআতাই সালাতিত তারাবিহ, সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তাআলা, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি, আল্লাহু আকবর।

বাংলায় তারাবি নামাজের নিয়ত

বাংলায় তারাবির নামাজের নিয়ত হলোঃ 

আমি কেবলোমুখি হয়ে দুই রাকাআত তারাবির সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ নামাজের নিয়ত করছি। আল্লাহু আকবর। (জামাআত হলে যোগ করতে হবে এ ইমানের পেছনে পড়ছি)। 

কোন সময় নামাজ পড়া যাবে না

কোন সময় নামাজ পড়া যাবে না এ বিষয়টি জানতে অনেকেই আগ্রহী। দিবা রাত্রে পাঁচটার সময় নামাজ পড়া নিষিদ্ধ। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) বলেন,
  • আসরের নামাজের পর সূর্য না ডুবা পর্যন্ত আর কোন নামাজ নেই
  • ফজরের নামাজের পর সূর্য না উঠা পর্যন্ত আর কোন নামাজ নেই
উক্কবা বিন আমের (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রসূল (সঃ)  আমাদেরকে তিন সময় নামাজ পড়তে এবং মুর্দা দাফন করতে নিষেধ করতেন।
  • ঠিক সূর্য উদয় হওয়ার পর থেকে একটু উঁচু না হওয়া পর্যন্ত
  • সূর্য ডোবার কাছাকাছি হওয়া থেকে ডুবে না যাওয়া পর্যন্ত

ওযুর ফরজ কয়টি ও কি কি

ওযুর ফরজ কয়টি ও কি কি? ইসলামিক নিয়ম অনুসারে প্রচুর ফরজ চারটি এবং অজু করার সময় চারটি ফরজ কাজ রয়েছে। কেউ যদি ওযুর চারটি ফরজ কাজগুলো পরিপূর্ণভাবে পালন না করে তাহলে তার ওযু সম্পূর্ণভাবে হবে না। ওযুর চারটি ফরজ কাজ হলোঃ
  • সমস্ত মুখমণ্ডল ধৌত করা।
  • দুই হাতের কনুই পর্যন্ত ধৌত করা।
  • মাথার চার ভাগের এক ভাগ ধৌত করা।
  • দুই পা টাখনুসহ ধৌত করা।

ওযু ভঙ্গের কারণ কি কি

ওযু ভঙ্গের কারণ কি কি? নিচে দেওয়া হলোঃ
  • পায়খানা ও প্রসাবের রাস্তা দিয়ে কোন কিছু বের হওয়া
  • রক্ত, পোজ বা পানি বের হয়ে গড়িয়ে পড়া
  • মুখ ভরে বমি হওয়া
  • থুতুর সঙ্গে রক্তের ভাগ সমান বা বেশি হওয়া
  • জিব্বা কাত হয়ে ঘুমানো
  • পাগল, মাতাল বা অচেতন হয়ে পড়া
  • নামাজে উচ্চস্বরে হাসা

রোজা রাখা অবস্থায় দাঁত ব্রাশ করা যাবে কি

রোজা রাখা অবস্থায় দাঁত ব্রাশ করা যাবে কি অনেকেরই মনে প্রশ্ন জাগে। দীর্ঘ সময় দাঁত ব্রাশ না করার কারণে মুখে দুর্গন্ধ তৈরি হয় এবং তাতে কথা বলার সময় তার পাশে গন্ধ ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ অবস্থায় কি দাঁত ব্রাশ করা যাবে? দাঁত ব্রাশ করলে রোজা হবে। 


তবে পেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করার সময় ভুলে গলায় চলে যেতে পারে। এই অবস্থায় রোজা মাক্রুহ হবে বা রোজা ভেঙে যেতে পারে। তাই অল্প পরিমাণে পেস্ট নিয়ে দাঁত ব্রাশ করুন, এতে কোন সমস্যা হবে না। তবে সাবধানতা পূর্বক দাগ ব্রাশ করা উত্তম। 

লেখকের কথাঃ রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ - রোজা রাখার নিয়ত বাংলায়

রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ ও রোজা রাখার নিয়ত বাংলায় আজকের আর্টিকেলে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।রোজা রাখা পূর্বক অবশ্যই সাবধানতা বজায় রেখে কাজ করতে হবে। এবং সঠিক নিয়মে রোজা পালন করতে হবে। নামাজের সময় আমরা অনেকে দোয়া ভুল করি। এগুলো আমাদের সংশোধন করে নেয়া উত্তম।

লেখকের মতে, রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ সকলেরই জানা দরকার। তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা রোজা ভঙ্গের সম্পূর্ণ কারণ রোজা রাখার নিয়ত এবং ওযুর ফরজ সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আমাদের পোস্টটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন তাহলে সুন্দর একটি কমেন্ট করে জানাবেন। কোন অজানা বিষয়ে জানতে এখনই সার্চ করুন আমাদের ওয়েবসাইটে। সকলের সুস্থতা কামনা আজকে এখানেই শেষ করছি, ধন্যবাদ।  

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আওয়ার ড্রিম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url